এখন প্রয়োজন ভিটামিন সি
ঢাকা, ১০ মে, ২০২০: ভিটামিন সি হচ্ছে একটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি, যা শরীরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি এমন কিছু প্রাণরাসায়নিক প্রক্রিয়ার সঙ্গেও সম্পৃক্ত হয়, যার সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতার সম্পর্ক রয়েছে।
ভিটামিন সির দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রা হচ্ছে ৯০ মিলিগ্রাম, কিন্তু স্তন্যপান করানো নারী ও ধূমপায়ীদের যথাক্রমে ৩০ ও ৩৫ মিলিগ্রাম অতিরিক্ত গ্রহণ করতে হয়।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে এই ভিটামিন থাকা একান্ত প্রয়োজনীয়। ভিটামিন সি আপনাকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখে, বাড়ায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যান্টি–অক্সিডেন্টও বটে। তা ফ্রি র্যাডিক্যালস ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের হাত থেকে বাঁচায় আমাদের। বাড়ায় লিম্ফোসাইট বা শ্বেতকণিকার সংখ্যা, তা যেকোনো রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেও সমর্থ হয়। তা ছাড়া শরীরে লোহার শোষণের জন্যও ভিটামিন সি প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে যাঁরা নিরামিষ খান, তাঁরা যদি যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সি না গ্রহণ করেন, তাহলে কিন্তু উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে শরীর লৌহকণিকা শোষণ করতে পারে না।
ভিটামিন সি কোলাজেন সিন্থেসিসের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয় এবং তা ত্বক টানটান রাখতেও সাহায্য করে। জানেন কি, বয়স বাড়লে মানুষ স্মৃতিভ্রম ও হাড়ের স্বাস্থ্যক্ষয়গোছের যে ধরনের সমস্যায় ভোগে, তা ঠেকিয়ে রাখতে পারে ভিটামিন সি?
ভিটামিন মূলত শাকসবজিতেই পাওয়া যায়। লেবু ও লেবুজাতীয় সব টক ফল ভিটামিন সির চমৎকার উৎস। কমলা, মাল্টা, আঙুর, পেঁপে, আনারস, জাম, জাম্বুরা, আমড়া, কাঁচা আম ইত্যাদি ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। সবুজ পাতা গোত্রের সব সবজি ও শাকেও পাওয়া যাবে এই ভিটামিন। এ ছাড়া কিছু মসলাজাতীয় উদ্ভিদ যেমন: কাঁচা মরিচ, পুদিনাপাতা, ধনেপাতা ভিটামিন সির ভালো উৎস। ফলসবজি ভালো করে ধুয়ে নিয়ে কাঁচাই খান। কারণ, বেশি উত্তাপে ভিটামিন সির সব গুণ নষ্ট হয়ে যায়।
ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার ওপর যেভাবে প্রভাব ফেলে
● ভিটামিন সি বিভিন্নভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ (ইমিউন) ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। এটির অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট কার্যক্রম প্রদাহ কমায়, যা ইমিউন কার্যক্রম উন্নত করতে সাহায্য করে।
● ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বককে সুস্থ রাখে ও শরীরের ভেতর ক্ষতিকর কিছুর প্রবেশে বাধাদানে সহায়তা করে। ভিটামিন সি ত্বকের ক্ষত নিরাময় দ্রুত করে।
● ভিটামিন সি ফ্যাগোসাইটের কার্যক্রমও বাড়াতে পারে। ফ্যাগোসাইট হচ্ছে ইমিউন কোষ, যা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য কণাকে গিলে ফেলতে পারে।
● এ ছাড়া ভিটামিন সি লিম্ফোসাইটের বৃদ্ধি ও বিস্তার বাড়াতে পারে। লিম্ফোসাইট হচ্ছে এক প্রকারের ইমিউন কোষ, যা রক্তের বহিরাগত ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও বিষাক্ত পদার্থকে আক্রমণ করতে সংবহন অ্যান্টিবডি ও প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। তাই প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি গ্রহণ করুন।