করোনা: পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের খবর রাখছেন না কেউ
ঢাকা, ১৯ মে, ২০২০:করোনা বা ডেঙ্গু দুটোই মোকাবিলার প্রধান হাতিয়ার পরিচ্ছন্নতা। তাইতো ছুটির শহরেও দিনরাত তৎপর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে গেলেও করোনাযুদ্ধে আলোচনার বাইরেই তারা।
অথচ এরই মধ্যে ১ হাজারের বেশি কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জরিপে দেখা গেছে।
আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মী আক্রান্ত হলে বাসায় বাসায় সংক্রমণের শঙ্কা জানিয়ে সতর্ক হতে বলছেন চিকিৎসকরাও।
অদৃশ্য শত্রু করোনাভাইরাস। কোথায়, কিভাবে আঘাত হানবে জানা নেই কারো। গৃহস্থালী বর্জ্য নিয়ে দিনভর কর্মযজ্ঞ যাদের, সংক্রমণের ঝুঁকি তাদের অনেক বেশি সেটা সবারই জানা। তবুও সুরক্ষায় বিশেষ পোশাক তো দূরের কথা, নেই মাস্ক, গ্লাভসও।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের একজন বলেন, 'সবাইতো জানেন কি অবস্থা। তারপরেও আমরা ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছি।'
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আরেকজন বলেন, 'ময়লাতেও তো করোনা ভাইরাস রয়েছে, কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত মাস্ক গ্লাভস কিছুই পাইনি।'
আরেকজন বলেন, 'আমাদের কোনো ক্ষতি যদি হয় তাহলে আমাদের দেখার কেউই নেই।'
নগরীর সুস্থতা নিশ্চিতে এ মানুষগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করে গেলেও এদের নিরাপত্তার কথা যেন ভাবার কেউ নেই।
অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মী আক্রান্ত হলে তার মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারে প্রতিটি বাসা, ভেঙে পড়তে পারে নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও।
পেশাগত স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. মো. আব্দুল মতিন বলেন, 'পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আমাদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন তাদের মাধ্যমে বাড়িতে করোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে।'
সম্প্রতি পরিবেশবাদী গবেষণা সংস্থা এসডো বলছে, দেশজুড়ে এক হাজারের বেশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মী এখন অসুস্থ। ১ লাখ কর্মীর মধ্যে স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ নানা কারণে কাজ ছেড়েছেন প্রায় ৬০ হাজার।
এসডো মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, 'পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং হঠাৎ করেই যদি এই ব্যবস্থাপনাটা ভেঙে পড়ে তাহলে ঢাকা চরম ঝুঁকিতে পড়বে। নির্দিষ্ট করে এদের জন্য গাইডলাইন করার দরকার।'
নগর প্রশাসনের কর্মীদের নিরাপত্তা সামগ্রী দেয়া হয়েছে দাবি সিটি করপোরেশনের। তবে বেসরকারি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ হওয়ার কথাও মেনে নিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর বদরুল আমিন।
তিনি বলেন, 'পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের যারা ওনার। অর্থাৎ প্রাইভেটভাবে যারা আছেন তাদের বলা হয়েছে দেখি তারা কি করেন। দু একদিন দেখি।'
জন সচেতনতার অভাবে এ ঝুঁকি আরো প্রকট হচ্ছে বলেও দাবি সংশ্লিষ্টদের।