কার্বন নির্গমন হ্রাসে বাড়তে পারে ক্ষুধার্তের সংখ্যা
গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনার উদ্যোগ বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী দেশগুলো বিশ্ব ঊষ্ণায়ন রোধে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমণ হ্রাসে এক জোট হয়ে কাজ করছে।
প্রধান গবেষক জাপানের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ’ এর টোমোকো হাসেগাওয়া বলেন, “এ ঝুঁকির কারণে যে গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমণ হ্রাসের গুরুত্ব কমছে তা না নয়, তবে এতে করে এ ব্যাপারে আরো বিস্তৃত কৌশল নেয়ার প্রয়্জেনীয়তার দিকটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।”
এর আগে কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে কিভাবে খামারে উৎপাদন কমে যাবে। যার ফলে আরো বেশি মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে। আর গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমণ কমিয়ে আনতে পারলে জলবায়ুতে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়ে ফসল উৎপাদন বাড়বে।
কিন্তু নতুন গবেষণায় বলা হচ্ছে, কার্বন ডাই অক্সাইড বা গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমণ কমিয়ে আনার ফলে আরো অনেক পরোক্ষ কারণেই বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।
সর্বশেষ জি৭ সম্মেলনে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমাতে শিল্পোন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে।
এ ব্যাপারে জাপানের গবেষক হাসেগাওয়া বলেন, “উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বেশ কিছু ঘাস ও গাছপালা যেগুলো থেকে জৈব জ্বালানি পাওয়া যাবে সেগুলো উৎপাদনের জন্য কৃষিজমির প্রয়োজন। হয়ত ওইসব জমিতে এখন খাবার উৎপাদন হয়। তাই জৈব জ্বালানি উৎপাদন বাড়াতে হলে খাবার সরবরাহে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
এছাড়া, গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমাতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তা খুবই ব্যয় সাপেক্ষ। স্বাভাবিকভাবেই এটি ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে ফেলবে। ফলে খাবার কেনার মত পর্যপ্ত অর্থ তাদের হাতে থাকবে না।
তবে গবেষকরা হিসাব করে দেখেছেন, গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমণ হ্রাসের কারণে যত মানুষ অনাহারে পড়বে তার চেয়েও বেশি মানুষ অনাহারে থাকার ঝুঁকিতে পড়বে যদি গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাস করা না হয়।
এসবকিছু বিবেচনায় সবশেষে গবেষকরা পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, সরকারকে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে খাদ্য সহায়তা বাড়াতে হবে।
Collected: Bdnews 24