বনফুল লালভান্ডির
শ্রাবণের প্রায় শেষ। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ রোডটা চমৎকার। উখিয়া যেতে বাঁয়ে পাহাড়, ডানে সাগর। দুরন্ত এলোমেলো হাওয়া লুটোপুটি খায় গায়ে। হঠাৎ গাড়িটা সোজা না গিয়ে সোনারপাড়া মোড় থেকে বাঁয়ে বাঁক নিল। এ পথেই নাকি উখিয়া যেতে হবে। মেরিন ড্রাইভে প্রকৃতির নির্জনতার এই সুধারস ছেড়ে ঢুকে পড়তে হলো জনারণ্যে। সোনারপাড়া বাজার পেরিয়ে সোনাইঝুরি গ্রাম। চলেই যাচ্ছিলাম, কিন্তু একটা গাছ তার দুর্নিবার আকর্ষণে আর সামনে এগোতে দিল না। সরু রাস্তার ওপরেই গাড়িটা থামিয়ে দিতে হলো। কয়েকটা গাছে কী চমৎকার প্যাগোডার চূড়ার মতো লাল টুকটুকে অসংখ্য ফুল ফুটে আছে! এ জন্যই তো এ ফুলের ইংরেজি নাম প্যাগোডা ফ্লাওয়ার। গাছগুলো একটা ঝোপ করে ফেলেছে। রাস্তার ধারে একটা পগার মতো জলার্দ্র জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে তারা। পাতা বুনোগাছ ভাঁটের মতো, কিন্তু ভাঁটগাছের চেয়ে অনেক বড়। পাতলা ও নরম। নিচের দিকের পাতার কিনারা খাঁজকাটা হলেও ওপরের দিকের পাতায় খাঁজ নেই। ফুল নলাকার। ছোট পাঁচটি পাপড়ি তারার মতো, সুগন্ধ নেই। তবে ফুলের মধু নেওয়ার জন্য মৌমাছি ও প্রজাপতিরা ঘুরে বেড়ায়।
ফুলের রং লাল, তাই এ গাছকে সিলেটের লোকেরা বলে লালভাঁট গাছ। স্থানীয় এক মুরব্বি বললেন, চূড়া বা ছড়ায় ফুল ফোটে বলে কক্সবাজারের লোকেরা বলে ছড়া ফুল।