সাপপাখি, সাপকৌড়ি বা সাপগলা
পদ্মবনে বালিহাঁসের সাতটি ছানা চরে বেড়াচ্ছে। পদ্মপাতার ছাতার ছায়ায় ছায়ায় যেন হাঁটছে। অদূরেই চরছে মা-বাবাও; কিন্তু সতর্ক দৃষ্টি আকাশের দিকে। একটু বাদেই একটি মেছো ইগল আকাশ ফুঁড়ে নেমে আসতে লাগল। মা-বাবা দুবার সতর্কতাসংকেত দিয়ে ডুব দিল। সঙ্গে সঙ্গে ছানা সাতটি পদ্মবনে উধাও।
এদের পাশেই টুপটাপ ডুব দিয়ে মাছ শিকারে ব্যস্ত আরেকটি বড়সড় পাখি। সে–ও দিল ডুব। টলটলে জলের তলা দিয়ে কিছুটা এগিয়ে সাবধানে একটা শুধু ঘাড়-মাথা ও চোখা-লম্বা ঠোঁটটি আকাশমুখী করে স্থির হয়ে রইল। হঠাৎ নজরে পড়লে যে কেউ সাপ ভেবে আঁতকে উঠতে পারে। জলচর এই পাখিটির নামও কিন্তু সাপপাখি। সাপকৌড়ি, সাপগলা ও গয়ার নামেও এরা পরিচিত।
সাপপাখি ৫০-৬০ বছর আগেও বাংলাদেশের বড় বড় বিল-ঝিল-হাওর-বাঁওড়ে সুলভ ছিল। এখন একেবারেই কোণঠাসা। টলটলে জলের তলা দিয়ে যখন এরা টর্পেডো গতিতে মাছকে ধাওয়া করে, তখন ঠোঁট-গলা-মাথা, শরীরসহ চওড়া লেজটি টানটান হয়ে সরলরেখার মতো হয়ে যায়। মনে হয় দুরন্ত গতির জলসাপ।