বাঘ বাঁচাতে দেশ ঘুরবে ‘টাইগার ক্যারাভ্যান’
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ও বাঘ রক্ষায় দেশজুড়ে সচেতনতা তৈরিতে দুই বছরব্যাপী প্রচারাভিযান ‘টাইগার ক্যারাভ্যান’।
আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বসবে সংলাপ ‘টাইগার টক’। সেখানেই বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
বুধবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘বাঘ আমাদের গর্ব-বাঘ সুরক্ষা করব’- এই স্লোগান নিয়ে একটি বাস সারা দেশে ১০০টি স্থানে গিয়ে সুন্দরবন ও বাঘ বিষয়ক প্রদর্শনীর আয়োজন করবে।
পাশাপাশি পথনাটকসহ নানা আয়োজনে মানুষের মধ্যে বাঘ রক্ষার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করবে এই ‘ক্যারাভ্যান’।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড ও বন বিভাগের যৌথ আয়োজনে এই প্রচারাভিযান বাস্তবায়ন করবে বেসরকারি সংগঠন ওয়াইল্ডটিম, যারা বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ২০০৩ সাল থেকে কাজ করছে।
প্রকল্পের অন্যতম সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন জানান, ১১ ফেব্রুয়ারি ‘টাইগার টক’ শিরোনামে বাঘ সুরক্ষা বিষয়ক সংলাপে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ছাড়াও সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী ও ওয়াইল্ডটিমের প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলাম আলোচনায় অংশ নেবেন।
পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে শিশুদের চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, প্রদর্শনী এবং লোকসংগীতের আয়োজন চলবে দিনভর।
‘টাইগার ক্যারাভ্যান’ ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করেও তরুণদের বাঘ সুরক্ষায় সম্পৃক্ত করবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিশ্বে এখন মাত্র ৩ হাজার ২০০ বাঘ রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে ১০৬টি।
ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে বাংলাদেশের বন বিভাগ ও ভারতের বন্য প্রাণী ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক এক জরিপে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ওই সংখ্যা পাওয়া যায়।
১৯৭৫ সালের জরিপে (বুবার্ট হ্যান্ড্রিস) সুন্দরবনে ৩৫০টি বাঘের সংখ্যা নিরূপণ করা হয়। ১৯৮৪ সালের জরিপে (গিটিন্স ও আকন্দ) ৪৩০টি থেকে ৪৫০টি, ১৯৯২ সালে বন বিভাগের জরিপে ৩৫৯টি, ১৯৯৩ সালের পদচিহ্ন জরিপে (তামাংগ ও দে) ৩৬২টি, ২০০৪ সালের পাগমার্ক পদ্ধতির শুমারিতে (বন বিভাগ, ইউএনডিপি ও ভারতীয় বিশেষজ্ঞ) ৪৪০টি (২১ বাচ্চাসহ) ও ২০০৯ সালে রেডিও টেলিমেট্রি জরিপে (বন বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ) ৪০০টি থেকে ৪৫০টি বাঘ রয়েছে বলে ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঘ কমে যাওয়ার অর্থ হল, এই প্রাণীটির আবাসস্থল সঙ্কটে পড়েছে।
অন্যদের মধ্যে খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক ও ইউএসএইডের বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক জহির উদ্দিন আহমেদ, ইউএসএইড বাংলাদেশের ডেপুটি ডিরেক্টর কার্ল উরস্টার, ওয়াইল্ডটিমের প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ উৎস: